আজকের জেলা পরিক্রমা

বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর করেন যুবলীগ নেতাসহ ৩ সহযোগী

Share
Share

কুষ্টিয়ায় বহুল আলোচিত ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের পুরোধা বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় স্থানীয় এক যুবলীগ নেতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে তাদের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতাররা হলেন- কয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনিসুর রহমান আনিস (৩৫), সবুজ হোসেন (২০) ও হৃদয় আহমেদ (২০)।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) তানভীর আরাফাত শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে যুবলীগ নেতাসহ তিনজন গ্রেফতার হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ ঘটনার সঙ্গে এই তিনজন ছাড়াও বাচ্চু (৩২) নামের একজন পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

ভাস্কর্য ভাংচুরের কারণ জানতে চাইলে পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত জানান, কলেজ পরিচালনা পর্ষদ ও কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে গ্রেফতার যুবলীগ নেতা আনিসুর রহমান আনিসের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব রয়েছে। এ দ্বন্দ্বের জের ধরে ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে মোটরসাইকেল যোগে আসা কয়েক জন দুর্বৃত্ত কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়াা গ্রামের কয়া মহাবিদ্যালয়ে অবস্থিত বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর করে। পুলিশ শুক্রবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী কয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনিসুর রহমান আনিসকে গ্রেফতার করে। পরে তার দেয়া তথ্যমতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপর দুজন হৃদয় আহমেদ ও সবুজ হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।

ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ছিলেন একজন বাঙালি ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী নেতা। তিনি ‘বাঘা যতীন’ নামেই সকলের কাছে সমধিক পরিচিত। ভারতে ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

বাঘা যতীন ছিলেন বাংলার প্রধান বিপ্লবী সংগঠন ‘যুগান্তর দলে’র প্রধান নেতা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে কলকাতায় জার্মান যুবরাজের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ করে তিনি জার্মানি থেকে অস্ত্র ও রসদের প্রতিশ্রুতি অর্জন করেছিলেন।

তার জন্ম ১৮৭৯ সালে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থানায়। মাত্র ৩৫ বছর বয়সে ১৯১৫ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি একাই বাঘের সঙ্গে লড়াই করে বাঘ হত্যা করেছিলেন বলে ‘বাঘা যতীন’ নামে পরিচিত পেয়েছিলেন।

তার স্মৃতিকে ধরে রাখতে গ্রামের কলেজের সামনে ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়। ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর তৎকালীন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আবদুস সামাদ ভাস্কর্যটির উদ্বোধন করেন।

এর আগে ৪ ডিসেম্বর রাতে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়। ওই ঘটনায় পুলিশ মাদরাসার দুই শিক্ষক ও দুই ছাত্রকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই কুষ্টিয়ায় আবারও ভাস্কর্য ভাংচুরের ঘটনা ঘটলো।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles
আজকের জেলা পরিক্রমাসর্বশেষ

আগামীকাল থেকে শীত আরও বাড়বে

বৃহস্পতিবার থেকে দেশের তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে।  সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধানও...

আজকের জেলা পরিক্রমাঢাকাসর্বশেষ

পল্টনে সন্দেহভাজন ছিনতাইকারীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তরুণের মৃত্যু

রাজধানীর পল্টনের বিজয়নগর এলাকায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সাজু মোল্লা (২২) নামের এক...

আজকের জেলা পরিক্রমাবরিশাল

পরকীয়া করতে গিয়ে স্বামীর লাঠির আঘাতে প্রাণ গেল স্ত্রীর

বরগুনার আমতলীতে পরকীয়ার অভিযোগে স্বামীর লাঠির আঘাতে তিন্নি আক্তার (২০) নামে এক...

আজকের জেলা পরিক্রমা

পাওনা টাকা আনতে গিয়ে শ্রমিক খুন

পাওনা টাকা আনতে গিয়ে মো. আবুল কালাম আজাদ নামে (২৩) এক শ্রমিক...