Uncategorized

এ যেন আরেক সাহেদ, দুর্নীতির বরপুত্র ডা.জাহাংগীর! সাজেপ্রাপ্ত হয়েও চাকরী করছেন বহাল তবিয়তে।

Share
Share

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল সেবায় মানে সেরা থাকলেও গত তিন বছর ধরে যেন বিতর্কের উর্ধে। রয়েছে টেন্ডারবাজি থেকে শুরু করে দুর্নীতি, লোপাটসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ। আর এসবের পেছনে রয়েছে হাসপাতালের এম ও মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন। হাসপাতালে রেডিওলজি, প্যাথলজি, ইমার্জেন্সি এবং স্টোর থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই জাগাঙ্গীর। এছাড়া হাসপাতালের ফ্যান, হুইল চেয়ার, এক্সরে ফিল্ম থেকে শুরু করে এমন জিনিস নেই যা বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নেয়নি। রয়েছে চাকরী দেয়ার নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগও।

২০১৯ সালে এক মামলায় এক বছরের জেল প্রাপ্ত হয়েও এখনও স্বপদে বহাল দুর্নীতির বরপুত্র খ্যাত এই জাহাঙ্গীর। এছাড়াও তার নামে একাধিক মামলা থাকার পরেও পুলিশের ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

জানা যায়, ২০১৯ সালে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে যোগ দেয় এই এম ও। এর আগে বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগে বাবুল আহমেদের করা এক মামলায় এক বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। এছাড়াও তার নামে একই আদালতে প্রায় এক কোটি টাকার তিনটি মামলাও চলমান। এরপর সাতক্ষীরায় এসেও থেমে থাকেনি। বিভিন্ন কর্মচারীদের লোভ দেখিয়ে দূর্দান্ত প্রতাপে কাজ শুরু করেন আর এম ও মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন।

সদর হাসপাতালে যোগ দেয়ার কিছুদিনের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় লোন নেয়া শুরু করে। এর মধ্যে ব্যুরো বাংলাদেশ থেকে দশ লক্ষ টাকা, নবলোক সোসাইটি থেকে নয় লক্ষ টাকা, সি এস এস থেকে দুই লক্ষ টাকা , টিএমএসএস থেকে ২ লক্ষ টাকা এখনও পরিশোধ করিনি। সম্প্রতি নবলোক সোসাইটিতে তার দেয়া একটি চেক বাউন্স হলে কর্তৃপক্ষ বিব্রত হয়ে পড়ে। এছাড়া ইসলামী ব্যাংক সাতক্ষীরা শাখায় তার লোন পাঁচ লক্ষ টাকা, অগ্রনী ব্যাংক সাতক্ষীরা ব্রাঞ্চে ১০ লক্ষ টাকা , ডাচ বাংলা ব্যাংকে নিজ নামে ২৭ লক্ষ এবং স্ত্রীর নামে ৩৪ লক্ষ।

এছাড়াও বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ আটকে রেখে ঘুষ নিয়ে থাকেন তিনি। সদর হাসপাতালে ইলেকট্রনিক্স এবং বাউন্ডারি ওয়ালের ১৫ লক্ষ টাকার কাজ দায়সারা করেই ঠিকাদার এবং আর এম ও নিয়েছেন লক্ষ টাকা। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার নামে ১২ লক্ষ টাকা লুটপাট করা হয়েছে। এরকম শত শত খাতের দূর্নীতির যেন কোন জবাবদিহিতা নাই।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের সর্বেসর্বা জাহাঙ্গীর। অনৈতিক সুবিধা গ্রহন করে এক্সরে রিপোর্ট চেঞ্জ করে তিনি লক্ষ টাকা নিয়ে থাকেন। বারবার আদালত এবং ক্ষতিগ্রস্থ পক্ষ সিভিল সার্জন বরারব আবেদন করলেও কোন সমাধান হয়নি। এ ব্যাপারে তাকে সহযোগিতা করেন রেডিওগ্রাফাররা। সম্প্রতি কালীগঞ্জে এমন এক ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন পর্যন্ত হয়। পরবর্তীতে সিভিল সার্জন বরাবর সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসায় সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর হোসেনকে এক্সরে রিপোর্ট করতে নিষেধ করেন।

এছাড়াও ভূয়া গরীব রোগীদের সমাজসেবা সাহায্য ফর্ম এবং ভূয়া প্রতিবন্ধী কার্ড দিয়েও অর্থ আত্মসাৎ করেন তিনি। লক্ষ লক্ষ টাকা এই সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিচ্ছে। জাহাঙ্গীর হোসেনের এক বছরের জেল এবং এক কোটির মামলা স্বত্ত্বেও তিনি কীভাবে সরকারি চাকরিতে বহাল থাকেন তার পেছনে রয়েছে বিরাট ইতিহাস। জাহাঙ্গীর হোসেনের মামলার রায় হওয়া সত্ত্বেও তা বাধাগ্রস্থ করা হয় ঢাকা মেট্রোপলিটন আদালতের একজন কর্মকর্তা এবং পুলিশের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তার মাধ্যমে। শুধু তাই নয় এই দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি হাসপাতালে তিনটি কক্ষ দখল করে আছেন। যেখানে অনেক মেডিকেল অফিসার বসার জায়গা পান না। তার রুমগুলি হলো, প্যাথোলজির পাশে মধুমতি নামক রুম, প্রধান বিল্ডিং এর ২২৬ নম্বর রুম এবং তার মূল কক্ষ। অথচ হাসপাতাল চত্ত্বরেই তার জন্য বরাদ্দ রয়েছে একটি কোয়ার্টার।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles
Uncategorizedআইন-আদালতআন্তর্জাতিকপ্রচ্ছদরাজনীতিসর্বশেষ

ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাবে, আশা টবি ক্যাডম্যানের

আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন বিশেষজ্ঞ ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের বিশেষ পরামর্শক...

Uncategorized

‘আমি মনে করি, আমরা সবাই সৎ’

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘আমি মনে করি, আমরা সবাই সৎ। অসৎ...

Uncategorized

আন্দোলনের ভয়েই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে চায় সরকার: ভিপি নুর

আন্দোলনের ভয়েই সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়...

Uncategorized

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় যাবজ্জীবন...