আইন-আদালত

সোনা ছিনতাইয়ের ‘ক্লুলেস’ মামলায় আসামি আপন ভাই!

Share
Share

রাজশাহীতে আপন ভাইয়ের ১৭টি সোনার বার আত্মসাত করতে এক ব্যক্তি ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশের অনুসন্ধানে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে এসেছে। পুলিশ তাকে গ্রেফতারও করেছে। গ্রেফতার ব্যক্তির নাম জিতেন ধর (৪৮)। পুলিশ তার কাছ থেকে ১৬টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করেছে। একটি তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন।

গত ২১ ডিসেম্বর রাজশাহী মহানগরীর শিরোইল এলাকায় এই ছিনতাই নাটক সাজানো হয়েছিল।

এ নিয়ে স্বর্ণের মালিক দিজেন ধর নগরীর বোয়ালিয়া থানায় একটি মামলা করেন। এরপর শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) বোয়ালিয়া থানা পুলিশ জিতেন ধরকে গ্রেফতার করে। শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হয়।

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার জামনগর গ্রামে তার বাড়ি। বাবার নাম দীনেশ ধর।

সংবাদ সম্মেলনে আরএমপির পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক জানান, ছিনতাইয়ের নাটকটি সাজিয়েছিলেন জিতেন। তার পরিকল্পনা মোতাবেক মিজানুর রহমান মিজান ও মৃদুল নামে দুই ব্যক্তি পুঠিয়া থেকেই বাসের পেছনে পেছনে মোটরসাইকেল নিয়ে আসেন। তারা ব্যাগ ছিনতাইয়ের জন্য শহরে অন্য তিনজনকে মোটরসাইকেল নিয়ে প্রস্তুত রাখেন। জিতেন ও দ্বিজেন বাস থেকে নামলেই সে তথ্য অপেক্ষায় থাকা ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছে দেন মিজান ও মৃদুল। এরপরই ব্যাগ কেড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে আসল স্বর্ণগুলো জিতেনের বাড়িতেই ছিল। সেখান থেকে একটি বার জিতেন বিক্রি করে দেন। তাকে গ্রেফতারের সময় বাড়ি থেকে বাকি ১৬টি বার উদ্ধার করেছে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় বোয়ালিয়া থানা পুলিশ ‘ক্লু-লেস’ ঘটনাটির রহস্য উদ্ঘাটন করেছে। এ ঘটনায় শুধু জিতেনকেই গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। এখন তার সহযোগীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

আরএমপির মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, গ্রেফতার জিতেনের বড় ভাই দ্বিজেন ধর (৫০) ফেনীতে থাকেন। ২১ ডিসেম্বর তিনি ফেনীর দুটি জুয়েলার্স থেকে ১৭টি স্বর্ণের বার নিয়ে আসেন। সেদিন ভোরে তিনি রাজশাহীর পুঠিয়ায় ভাই জিতেনের বাড়ি আসেন। তিনি ভাই জিতেনকে বারগুলো রাখতে দেন। প্রতিটি বারের ওজন ১০ ভরি। মোট ১৭ বারের মূল্য প্রায় এক কোটি ১২ লাখ ৭১ লাখ টাকা। জিতেন একজন ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি। তিনি এই স্বর্ণের বারগুলো আত্মসাতের পরিকল্পনা করেন। এ জন্য তিনি বারের পরিবর্তে তিনটি সীসার রড কাগজে স্কচটেপ দিয়ে পেঁচিয়ে স্বর্ণের বারের ব্যাগে রেখে দেন। আর আসল বারগুলো নিজের বাড়িতেই রেখে দেন। পরে দ্বিজেন তার ভাই জিতেনকে সঙ্গে নিয়ে রাজশাহী শহরে জুয়েলার্সের দোকানে স্বর্ণের বার বিক্রি করতে আসেন। ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে জিতেন আগে থেকেই ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়ে আসেন। জিতেন ও দ্বিজেন নগরীর শিরোইল এলাকায় পৌঁছামাত্র হঠাৎ দুটি মোটরসাইকেল নিয়ে চারজন ব্যক্তি এসে নিজেদের ‘প্রশাসনের লোক’ পরিচয় দেন। তাদের কাছে থাকা হ্যান্ডকাপ দেখান। তারা জিতেনের কাছে থাকা ব্যাগটি জোর করে কেড়ে নেয়। মানিব্যাগ এবং দুটি মুঠোফোনও কেড়ে নেওয়া হয়। এরপর তারা মোটরসাইকেল নিয়ে চলে যান।

অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস আরও বলেন, ১৭টি বারের মধ্যে একটি বার বিক্রি করে দিয়েছিল জিতেন। যে দোকানে বিক্রি করা হয়েছিল, দোকানের প্রত্যয়নপত্রও নিয়ে আসা হয়েছে।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles
আইন-আদালতগণমাধ্যমজাতীয়প্রচ্ছদবরিশালসর্বশেষ

বাংলাভিশন ডিজিটাল এর নির্বাহী সম্পাদক বদরুল আলম নাবিলের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদ

বাংলাভিশন ডিজিটাল এর নির্বাহী সম্পাদক বদরুল আলম নাবিলের বিরুদ্ধে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান...

আইন-আদালতজাতীয়ঢাকাপ্রচ্ছদসর্বশেষ

কেরানীগঞ্জে রূপালী ব্যাংকে ঢুকে পড়া তিন ডাকাতের আত্মসমর্পণ

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া পাকাপোল এলাকায় রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখা ঢুকে পড়া...

আইন-আদালতক্যাম্পাসরাজনীতিলাইফস্টাইলসর্বশেষ

প্রতিশোধ না নিয়ে হামলাকারীর প্রতি উদারতা দেখালেন বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন

নিজের ওপর হামলার প্রতিশোধ না নিয়ে উল্টো হামলাকারীকে ক্ষমা করে দিয়ে চরম...

Uncategorizedআইন-আদালতআন্তর্জাতিকপ্রচ্ছদরাজনীতিসর্বশেষ

ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাবে, আশা টবি ক্যাডম্যানের

আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন বিশেষজ্ঞ ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের বিশেষ পরামর্শক...