
‘হাল ছেড়ো না’-ফাওয়াদ আলমের ক্যারিয়ারটা হতে পারে যে কারও জন্য বড় অনুপ্রেরণা। দীর্ঘদিন জাতীয় দলের বাইরে থেকে যারা অবসরের কথা ভাবছেন, তাদের নতুন করে সাহস দিতে পারে ফাওয়াদের লড়াকু মানসিকতা।
ক্যারিয়ারে উত্থান পতন কাকে বলে, পাকিস্তানি এই ব্যাটসম্যানের চেয়ে ভালো বোধ হয় আর কেউই বলতে পারবেন না। ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক, অভিষেকেই সেঞ্চুরি।
এরপর তো আর পেছনে ফিরে তাকানোর কথা ছিল না ফাওয়াদের। কিন্তু তাকে পেছনে ফিরতে হলো। ওই বছরই আর দুটি টেস্ট খেলে বাদ পড়লেন। পড়লেন তো পড়লেনই। দীর্ঘ ১১ বছর পর দলে জায়গা হয়নি। অবশেষে গত আগস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অপ্রত্যাশিতভাবে ডাক পান।
ফেরার পরও অবশ্য তেমন ভালো করতে পারেননি। তিন ইনিংসে করেন-০, ২১ আর ০*। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত খেলে জাতীয় দলে জায়গা ফিরে পাওয়া ফাওয়াদকে এবার আর অল্প কিছু ইনিংস দেখে বাদ দেয়ার মতো ভুল করেননি নির্বাচকরা।
নিউজিল্যান্ড সফরেও তাই জায়গা পেয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। মাউন্ট মুঙ্গাইনুইতে প্রথম ইনিংসে মাত্র ৯ রানে আউট হয়েছিলেন ফাওয়াদ। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসেই দেখিয়ে দিয়েছেন-অভিজ্ঞতা বাজারে কিনতে পাওয়া যায় না।
৩৫ পেরোনো ফাওয়াদের সেঞ্চুরিতে চড়েই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টটি পঞ্চম দিনে এসে প্রায় ড্র করে ফেলেছিল পাকিস্তান। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি। দিনের মাত্র ২৮ বল বাকি থাকতে অলআউট হয়ে গেছে সফরকারিরা, হেরেছে ১০১ রানে।
তবে ফাওয়াদ চতুর্থ ইনিংসে সেঞ্চুরি করে ঠিকই প্রশংসা কুড়িয়েছেন। দুই সেঞ্চুরির মধ্যে ব্যবধান ৪২১৮ দিনের। তার চেয়ে বেশিদিনের বিরতি দিয়ে ক্রিকেটে টেস্ট সেঞ্চুরি পাওয়ার ইতিহাস আছে কেবল দুজনের। একজন ওয়ারেন বার্ডস্লে (৫০৯৩ দিন) এবং অপরজন মুশতাক আলি (৪৫৪৪ দিন)।
ফাওয়াদের সেঞ্চুরিটি পাকিস্তানি কোনো ব্যাটসম্যানের নিউজিল্যান্ডের মাটিতে চতুর্থ ইনিংসে করা একমাত্র সেঞ্চুরি ইনিংস। সবমিলিয়ে ধৈর্য আর সাহসিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত হয়েই থাকবে এই সেঞ্চুরি।
Leave a comment