অর্থ ও বাণিজ্য

চামড়া শিল্পনগরীতে যাওয়া কারখানার ঋণ পরিশোধে বিশেষ সুবিধা

Share
Share

সাভারের চামড়া শিল্পনগরীতে স্থানান্তর হওয়া কারখানাগুলোকে ব্যাংকঋণ পরিশোধে বিশেষ ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অন্য খেলাপি ব্যবসায়ীদের মতো মাত্র ২ শতাংশ টাকা জমা দিয়ে (ডাউন পেমেন্ট) ১০ বছরের জন্য তাঁদের ঋণ পুনর্গঠন, পুনঃ তফসিল বা এক্সিট সুবিধা দেওয়া যাবে। এ সুবিধা নিতে আগ্রহী চামড়া উদ্যোক্তাদের আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে আবেদন করতে হবে।

গতকাল বুধবার এ–সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগেও চামড়া খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো একই সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। তবে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান এই সুবিধা নিতে পারেনি।

ইতিমধ্যে চামড়া খাতের জন্য ঘোষিত বিভিন্ন নীতিমালার আওতায় যারা ঋণ পুনর্গঠন, পুনঃ তফসিল, সুদ মওকুফ সুবিধা নিয়েছে, তারাও এ সার্কুলারের আওতায় সুবিধা পাবে। জাল-জালিয়াতি বা অন্য কোনো ধরনের প্রতারণার মাধ্যমে ঋণ নেওয়া ঋণগ্রহীতারা এই সুবিধা পাবে না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, কোনো প্রতিষ্ঠান একবার সুবিধা নেওয়ার পর নির্ধারিত ছয়টি মাসিক কিস্তি বা দুটি ত্রৈমাসিক কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলে এ সুবিধা বাতিল হবে। প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, চামড়া শিল্পনগরীতে স্থানান্তরিত যেসব প্রতিষ্ঠান ব্যবসা অব্যাহত রাখবে, তাদের ২০২০ সালের ঋণ স্থিতির ন্যূনতম ২ শতাংশ অর্থ ডাউন পেমেন্ট হিসেবে নগদে আদায় করে এ সুবিধা দেওয়া যাবে। এ প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ ১০ বছর মেয়াদে ঋণ পুনর্গঠন বা পুনঃ তফসিল করা যাবে। বিদ্যমান বিধিবিধান ও আইনকানুন অনুযায়ী ব্যাংকার গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে স্থগিত সুদ, অনারোপিত সুদ ও দণ্ড সুদ মওকুফ বিষয়ে পর্ষদ সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। এ ক্ষেত্রেও কোনো অবস্থাতেই আসল ঋণ মওকুফ করা যাবে না।

এতে আরও বলা হয়, যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান ব্যবসা অব্যাহত রাখতে সমর্থ নয়, এক্সিট নীতিমালার আওতায় তাদের ঋণ পরিশোধের সুযোগ দেওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে ২০২০ সালের ডিসেম্বরের ঋণ স্থিতির ন্যূনতম ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট হিসেবে নগদ আদায় করে এক্সিট সুবিধা দেওয়া যাবে। যেসব প্রতিষ্ঠানের ঋণ স্থিতি পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত, তাদের দায়দেনা পরিশোধের জন্য সর্বোচ্চ তিন বছর সময় দেওয়া যাবে। আর ঋণের পরিমাণ পাঁচ কোটি টাকার বেশি হলে দায়দেনা পরিশোধের জন্য পাঁচ বছর সময় দেওয়া যাবে। কোনো অবস্থাতেই আসল মাফ করা যাবে না। ব্যাংক গ্রাহকের সম্মতিতে যৌথ উদ্যোগে জামানত হিসেবে রক্ষিত সম্পত্তি বিক্রি করা যাবে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পুনর্গঠন করা ঋণ স্থিতির ওপর সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ হারে সুদ আরোপ করা যাবে। মওকুফ হওয়া সুদ পৃথক সুদবিহীন অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করতে হবে। পুনর্গঠন বা পুনঃ তফসিলের শর্ত মোতাবেক সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধ হওয়ার পর পৃথক হিসাবে স্থানান্তরিত সুদ চূড়ান্ত মওকুফ হিসেবে বিবেচিত হবে।

ঋণ নিয়মিতভাবে পরিশোধ করতে না পারায় তা বিরূপ মানে শ্রেণীকৃত হয়েছে। তাই এ খাতে স্বাভাবিক ঋণপ্রবাহ বজায় রাখা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হচ্ছে না। এ রকম প্রেক্ষাপটে চামড়াশিল্পের অনিয়মিত ঋণ আদায়সহ তা কমানোর জন্য এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles
অর্থ ও বাণিজ্যসর্বশেষ

বেক্সিমকোর ১৬ প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব নেই, ব্যাংক ঋণ ৪০ হাজার কোটি টাকা

বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে বেক্সিমকো লিমিটেডের ৩২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬টির কোনো অস্তিত্ব খুঁজে...

অর্থ ও বাণিজ্যসর্বশেষ

পণ্য খালাসে বিলম্ব এড়াতে সাময়িক ছাড়পত্র দেবে বিএসটিআই

আমদানি করা শিল্পের কাঁচামাল খালাসে বিলম্ব এড়াতে শর্তসাপেক্ষে সাময়িক ছাড়পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত...

অর্থ ও বাণিজ্যসর্বশেষ

ফোনে কথা বলা, রেস্তোরাঁ, পোশাকে ভ্যাট কমানোর আদেশ জারি

ভ্যাট বাড়ানোর দুই সপ্তাহের মধ্যে কিছু পণ্য–সেবায় ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক কমাল...

অর্থ ও বাণিজ্যকর্পোরেটজাতীয়ঢাকাসর্বশেষ

আশুলিয়ায় ২২ কারখানায় সাধারণ ছুটি

ঢাকার সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের অন্তত ২২টি পোশাক কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা...