আন্তর্জাতিকলীড নিউজ

ব্যাক্তিগত সম্পদের তথ্য গোপনে বৃটেনের রানির তদবির

Share
Share

রানি এলিজাবেথের সম্পদের পরিমাণ কখনো জনসমক্ষে প্রকাশ করা না হলেও ধারণা করা হচ্ছে টাকার অংকে তা প্রায় হাজার মিলিয়ন পাউন্ড ছাড়িয়ে যাবে

বৃটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ তার সম্পদের পরিমাণ জনসমক্ষে প্রকাশ ঠেকাতে তদবির করেছেন। ১৯৭০ সালের একটি আইনের খসড়া পরিবর্তনের মাধ্যমে তিনি তার ব্যাক্তিগত সম্পদের “লজ্জাজনক” পরিমাণ যেন গোপন রাখা হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত রবিবার বৃটিশ দৈনিক দ্যা গার্ডিয়ান সরকারি বিভিন্ন নথি সম্বলিত একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে দেখা গেছে রানি এলিজাবেথ উইন্ডসরের আইনজীবী বৃটেনের মন্ত্রীদের চাপ প্রয়োগ করেন যেন তার সম্পদের অংশীদারিত্বের তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করা না হয়।

রানির হস্তক্ষেপের ফলশ্রুতিতে বৃটিশ সরকার আইনের একটি ধারা সংশোধনের মাধ্যমে ব্যাক্তিমালিকানাধীন কোম্পানির তাদের শেয়ারহোল্ডার হিসেবে “রাষ্ট্রপ্রধান”-এর তথ্য প্রকাশের ক্ষমতা রহিত করেছে।

১৯৭০ সালে এক সমঝোতা চুক্তির আলোকে ২০১১ সাল পর্যন্ত রানির সম্পদ এবং বিনিয়োগের তথ্য গোপন করা বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছিলো। চুক্তির আওতায় একটি সরকারি ভুয়া কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা হয় যার অধীনে লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে বলে প্রকাশ করা হতো।

রানি এলিজাবেথের সম্পদের পরিমাণ কখনো জনসমক্ষে প্রকাশ করা না হলেও ধারণা করা হচ্ছে টাকার অংকে তা প্রায় হাজার মিলিয়ন পাউন্ড ছাড়িয়ে যাবে।

বৃটিশ পার্লামেন্টে মন্ত্রীদের সঙ্গে গোপন যোগসাজোসের মাধ্যমে আইন প্রণয়নে “রানির সম্মতি” ধারা ব্যবহার করে রাজপরিবার আইনের ধারা সংশোধনে প্রভাব বিস্তার করেছে। গার্ডিয়ানের তদন্তে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

বৃটেনের শাসন ব্যবস্থায় কোন বিল আইনে পরিণত হবার পূর্বমূহুর্তে তাতে রানির সম্মতির প্রয়োজন হয়। পার্লামেন্টে পাসের পূর্বে রানির সম্মতি ছাড়া কোনো আইন পাস করা সম্ভব নয়।

সম্মতি প্রদানের ক্ষেত্রে রাজপরিবারের মানহানি হয় অথবা রাজস্বার্থের সাথে সাঙ্ঘর্ষিক এমন প্রস্তাব সম্পর্কে মন্ত্রীগণ পূর্বেই রাণিকে সতর্ক করে থাকেন।

রাজ পরিবারের ওয়েবসাইট অনুযায়ী “রানির সম্মতি'” একটি দীর্ঘমেয়াদী ধারাবাহিকতার ফলশ্রুতি। তবে সংবিধান বিশেষজ্ঞগণ এই বিষয়টিকে আড়ম্বরপূর্ণ কিন্ত বিপদজনক নয় এমন একটি আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে বর্ণনা করে থাকেন।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রকাশিত দলিল অনুযায়ী দেখা যায়, রানি তার সাংবিধানিক ক্ষমতার বদৌলতে আইন পাসের পূর্বেই তার বিস্তারিত জানতে পারেন। সেই সুযোগে তিনি প্রভাব বিস্তার করে আইনের ধারায় ব্যাক্তিগত সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আইনের ধারা পরিবর্তনের জন্য তদবির চালিয়েছেন।

প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৩ সালের নভেম্বরে প্রস্তাবিত এক বিলে রানি এলিজাবেথ জানতে পারেন বিলটি আইনে পরিণত হলে রাজপরিবারের সম্পদের তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশিত হতে পারে। তিনি তৎক্ষণাৎ তার ব্যাক্তিগত আইনজীবীকে সরকারের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রেরণ করেন।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মূলত আইনটি প্রণয়ণের লক্ষ্য ছিলো ভুঁইফোড় কোম্পানির নামে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের গোপনে অর্থসঞ্চয় বন্ধ করা।

আইনটি পাস হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ যে কোনো সময় যেকোন কোম্পানির সব শেয়ারহোল্ডার বা তাদের উত্তরাধিকারদের যাবতীয় তথ্য প্রকাশে বাধ্য থাকতো।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles
আন্তর্জাতিকসর্বশেষ

শব্দের চেয়ে ৪ গুণ গতির ড্রোন বানাচ্ছে চীন

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স কিছু দিন আগে পরবর্তী...

রাজনীতিলীড নিউজসর্বশেষ

এক-এগারোর ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এক-এগারোর ভয় দেখিয়ে...

আন্তর্জাতিকসর্বশেষ

ভারতে বাংলাদেশি নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা

ভারতে কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরু শহরের কালকেরে হ্রদের কাছে ২৮ বছর বয়সী বাংলাদেশি...

আন্তর্জাতিকসর্বশেষ

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের হুঁশিয়ারি সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রীর

ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন চীনের বিরুদ্ধে নতুন হুমকি নিয়ে হোয়াইট হাউসে ফিরে এসেছেন।...