আইন-আদালতলীড নিউজ

রায় ঘোষণার সময় ট্রাইব্যুনালে হাজির ফয়জুল্লাহ গ্রেফতার

Share
Share

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার ৪২তম রায় ঘোষণার আগে বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে এ এফ এম ফয়জুল্লাহ নামে এক ব্যক্তি ট্রাইব্যুনালের গেটে এসে নিজেকে এই মামলার প্রধান আসামি দাবি করে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে চান। পরে তাকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হলে ট্রাইব্যুনালের মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ট্রাইব্যুনালে আসামিকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশিদ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মনোয়ারা বেগম বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এ এফ এম ফয়জুল্লাহ এতদিন পলাতক ছিলেন। বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করতে চাইলে তাকে শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর গফরগাঁও পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহবাগ থানাকে তার পরিচয় নিশ্চিত করা হলে গ্রেফতার করা হয়।

বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনালে আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান আসামির সাথে কথা বলার পর তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আমিও এই মামলার সব আসামিকে সঠিকভাবে চিনি না।’ তবে এই মামলার আসামি বলে তথ্য নিশ্চিত করেন তিনি।

আব্দুস সাত্তার পালোয়ান বলেন, ‘আজ (বৃহস্পতিবার) ট্রাইব্যুনালে একটি মামলার রায়ের দিন নির্ধারিত ছিল। এই দিন সকালে ট্রাইব্যুনালের গেটের বাইরে নিরাপত্তা কর্মীদের কক্ষে বসে থাকা এক ব্যক্তি নিজেকে মানবতাবিরোধী মামলার পলাতক আসামি বলে আত্মসমর্পণ করতে আসেন। ওই ব্যক্তি নিজেকে ময়মনসিংহের এ এফ এম ফয়জুল্লাহ বলে দাবি করেন এবং আজই (বৃহস্পতিবার) আত্মসমর্পণ করতে চান। তবে এ সময় তার পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিল না। এরপর তাকে ট্রাইব্যুনালের গেটের বাইরে নিরাপত্তাকর্মীদের কক্ষে বসিয়ে রাখা হয়। রায় ঘোষণার পর বেলা ২টার দিকে তাকে শাহবাগ থানায় পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়।’

এদিকে বৃহস্পতিবার একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ময়মনসিংহের তিন আসামিকে আমৃত্যু ও পাঁচ আসামিকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে মামলার রায়ে একজনকে খালাস দেন ট্রাইব্যুনাল।

রায়ে মো. সামসুজ্জামান ওরফে আবুল কালাম, এএফএম ফয়জুল্লাহ (পলাতক), আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডলকে (পলাতক) আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়। ২০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয় মো. খলিলুর রহমান, মো. আব্দুল্লাহ, মো. রইছ উদ্দিন আজাদী ওরফে আক্কেল আলী, আলিম উদ্দিন খান (পলাতক) এবং সিরাজুল ইসলাম তোতাকে। এছাড়া অভিযোগ থেকে খালাস পাওয়া একমাত্র আসামি হলেন আবদুল লতিফ।

এই রায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া এ এফ এম ফয়জুল্লাহকে পলাতক দেখানো হয়। তার নামের সঙ্গে ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করতে আসা আসামির নামের মিল রয়েছে। তবে তিনিই সেই ব্যক্তি কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত করেনি প্রসিকিউশন। কিন্তু আজ সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে মামলায় আমৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles
রাজনীতিলীড নিউজসর্বশেষ

এক-এগারোর ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এক-এগারোর ভয় দেখিয়ে...

জাতীয়লীড নিউজসর্বশেষ

শেখ হাসিনার আমলের প্রবৃদ্ধির পুরোটাই ভুয়া: রয়টার্সকে ড. ইউনূস

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত...

জাতীয়লীড নিউজসর্বশেষ

১৬ বছর পর কারামুক্ত বিডিআরের ১৬৮ সদস্য

দীর্ঘ ১৬ বছর পর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন বিস্ফোরক মামলায় জামিন পাওয়া...

জাতীয়লীড নিউজসর্বশেষ

জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে ড. ইউনূসের সাক্ষাৎ

সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনের ফাঁকে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে...