আন্তর্জাতিক

ভ্যাকসিন আসায় কলকাতায় মাস্ক পরতে অনীহা

Share
Share

করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন এসে গেছে বলে অনেকেই ভাবছেন, করোনাও চলে গেছে। তাই সব জায়গাতে মানুষের ভিড় চোখে পড়ছে। গণপরিবহন থেকে শুরু করে ভারতের বেশিরভাগ জায়গাতেই একই অবস্থা। গত ১০-১৫ দিন ধরে কলকাতার গণপরিবহনে যাত্রীদের ভিড় বাড়ছে। গণপরিবহনের যাত্রীসহ অনেকেরই মাস্ক পরার প্রতি অনীহা তৈরি হয়েছে, যা দেখে বোঝার উপায় নেই যে, শহরের অনেকেই এখনো করোনার সঙ্গে লড়ছেন। খবর : আনন্দবাজার পত্রিকা।

এমনকি মুম্বাইয়ের মতো শহরেও নতুন করে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকলেও তা নিয়ে কারও উদ্বেগ নেই। কেউ মাস্ক পরলে তাকে তাচ্ছিল্যও করছেন অনেকে। কেউ কেউ প্রকাশ্যেই বলছেন, ‘মাস্ক পরলে এখন বোকা বোকা লাগে!’

বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে নোয়াপাড়া থেকে মেট্রোয় উঠেছিলেন এক ব্যক্তি। দমদম পেরোতেই মাস্কবিহীন যাত্রীর ভিড় দেখে আতঙ্কিত হয়ে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘মাস্ক কোথায়?’। তার এ প্রশ্ন শুনে যারা মাস্ক পরেননি, তারা ওই ব্যক্তির দিকে তেড়ে আসেন!

তবে মাস্ক পরে রয়েছেন এমন অনেকেও বলে ওঠেন, ‘করোনা অনেক হয়েছে। নেহাত বারবার খুলতে-পরতে সমস্যা হয়, তাই আমাদের মতো অনেকেই এখনও একটানা পরে থাকেন।’

গড়িয়াহাট মোড়ে বেশ কয়েকটি অটো ছেড়ে দিয়ে বিরক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন তমালিকা বসু নামের এক নারী। তিনি বলেন, ‘অফিস যাব। এই নিয়ে চারটা অটো ছাড়লাম। সবাই মাস্ক পরে আছেন, এমন একটা অটোও দেখলাম না! মাস্ক না থাকলে উঠবো না বলায় এক অটোচালক বললেন, ওসব দিন গেছে। দাঁড়িয়ে থাকুন!’

দমদমে শান্তিপুর লোকাল ট্রেন থেকে নামা মাস্কবিহীন মধ্যবয়সী এক যাত্রী বলেন, ‘ভ্যাকসিনের জোরেই সবাই ছুটছেন। মাস্ক লাগবে না!’

ভ্যাকসিন নিয়েছেন কি না জিজ্ঞেস করতে তিনি বললেন, ‘ভ্যাকসিনের কথা কানে তো শুনেছি, তাহলেই হবে!’

এ ব্যাপারে পরজীবী বিশেষজ্ঞ অমিতাভ নন্দী বলেন, ‘জাতীয় সড়ক ধরে কলকাতার দিকে ফিরতে গিয়ে কোনো গণপরিবহনেই মাস্ক পরা যাত্রী দেখি না। ভ্যাকসিন এসে গেছে ভেবে যারা বীরত্বের সঙ্গে ছুটছেন, তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, ভ্যাকসিন নিয়ে কোনো চিকিৎসককে মাস্ক ছাড়া রোগী দেখতে দেখছেন? ভ্যাকসিন নিয়েও যদি তাদের মাস্ক পরে থাকতে হয়। তাহলে ভ্যাকসিন না পেয়ে কীসের জোরে আপনারা মাস্ক ছাড়া ছুটছেন?’

ডা. অরুণাংশু তালুকদার বলেন, ‘আমজনতার কাছে ভ্যাকসিন আসতে মনে হচ্ছে আরও বেশ কিছুদিন সময় লাগবে। এই পরিস্থিতিতে মুম্বাইয়ের পরিস্থিতি দেখেও কি আমাদের শিক্ষা হবে না? তাহলে আমরা কি আবার সেই লকডাউনই চাচ্ছি?’

জনগণের কাছে প্রশ্ন রেখে কার্ডিও থোরাসিক সার্জন কুণাল সরকার বলেন, ‘করোনার জেরে জীবন-জীবিকার কী অবস্থা হয়েছিল, সেটা কি আমরা ভুলে যাচ্ছি? মাস্ক পরে থাকলে যদি সংক্রমণ কমে, আবার লকডাউন এড়ানো যায়, তাহলেও কি সেটা পরব না? তাৎক্ষণিক হিরোইজম কি আমাদের জীবন-জীবিকা টিকিয়ে রাখার চেয়েও বড়?’

নিউরো-মেডিসিনের চিকিৎসক বিমানকান্তি রায় বলেন, ‘কড়া বাঁধন না থাকলে আমরা যে বিধি মানি না, তা গণপরিবহনের বর্তমান অবস্থা দেখলেই বোঝা যায়। যাদের এই বিষয়টি দেখা দরকার তারা ভোট নিয়ে ব্যস্ত। ফের সংক্রমণ বাড়তে থাকলে ভোট হবে?’

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles
আন্তর্জাতিকসর্বশেষ

শব্দের চেয়ে ৪ গুণ গতির ড্রোন বানাচ্ছে চীন

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স কিছু দিন আগে পরবর্তী...

আন্তর্জাতিকসর্বশেষ

ভারতে বাংলাদেশি নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা

ভারতে কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরু শহরের কালকেরে হ্রদের কাছে ২৮ বছর বয়সী বাংলাদেশি...

আন্তর্জাতিকসর্বশেষ

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের হুঁশিয়ারি সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রীর

ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন চীনের বিরুদ্ধে নতুন হুমকি নিয়ে হোয়াইট হাউসে ফিরে এসেছেন।...

আন্তর্জাতিকসর্বশেষ

দায়িত্ব নিয়েই সেনা মোতায়েন শুরু করেছেন ট্রাম্প

অভিবাসন নিয়ে কঠোরতার ঘোষণা দিয়েছেন মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরই অংশ হিসেবে...