Uncategorized

রসায়ন বইয়ের বিখ্যাত লেখক প্রফেসর নূরুল হক মিয়া আর নেই

Share
Share

ঢাকা কলেজের সাবেক প্রিন্সিপাল প্রফেসর মো. নূরুল হক মিয়া আর নেই।

শনিবার তিনি রাজধানীর আজিমপুরস্থ আমতলা রোড ৩০ নং শেখ সাহেব বাজারের নিজ বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে হাফেজ মাওলানা এহসানুল হক।

তিনি জানান, আজ এশার নামাজের পর সাত মসজিদ চত্বরে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। পরে তাকে রাজধানীর কেরানীগঞ্জের ঘাটারচরে পারিবারিক গোরস্থানে শাইখুল হাদীস আজিজুল হক (রহ.) এর পাশে দাফন করা হবে।

প্রফেসর নূরুল হক মিয়া বিখ্যাত ছিলেন রসায়নবিদ হিসেবে। কেমিস্ট্রি প্রফেসর হিসেবে তার খ্যাতির মূল কারণ ছিল বই। ইন্টার ও ডিগ্রি ক্লাসে রসায়নের ওপর লিখিত তার সাতটি বই সিলেবাস ভুক্ত। বিশেষ করে ১৯৭৩ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত সারা দেশে এককভাবে রাজত্ব করেছে এইচএসসির তার লেখা রসায়ন বইটি। দ্বিতীয় কোন বই ছিল না।

১৯৬৯ এ শিক্ষকতার পেশায় যোগ দিয়ে অধ্যাপনা করেছেন দেশসেরা প্রতিষ্ঠানসমূহে। সিলেট এমসি কলেজ, ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজ, টাংগাইল করোটিয়া কলেজ, ঢাকা বিজ্ঞান কলেজ, জগন্নাথ কলেজ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। প্রায় দীর্ঘ এক যুগ ছিলেন ঢাকা কলেজে। কেমিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টের হেড ছিলেন চার বছর। সর্বশেষ ২০০১ সালে তিনি ঢাকা কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রফেসর মো. নূরুল হক মিয়ার আরও একটি পরিচয় হলো তিনি হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা মামুনুল হক সাহেবের ভগ্নিপতি তিনি।

১৯৪৪ সালের ১ জুলাই গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার অজপাড়া জন্ম নেয়া নূরুল হক শিক্ষা জীবনের শুরু থেকেই মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন। পড়াশুনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টে। সেশন ১৯৬৬-৬৭। থাকতেন ফজলুল হক মুসলিম হলের ৩৫৯ নম্বর রুমে।

পড়াশুনার জীবনের সঙ্গিসাথিদের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিখ্যাত অনেকেই আমাদের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তো। আমার পাশেই ৩৬১ নম্বর রুমে থাকতো আব্দুর রাজ্জাক। তিনি পড়তেন পলিটিক্যাল সাইন্সে। তিনি আমার এক বছরের সিনিয়র ছিলেন। আমরা এক সঙ্গে চার বছর ছিলাম। তার সঙ্গে বেশ ভালো সম্পর্ক ছিল আমার। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের সাবেক শীর্ষনেতা ও মন্ত্রী ছিলেন।

প্রফেসর মো: নূরুল হক মিয়া শিক্ষাজীবনে তোফায়েল আহমদ, ফেরদাউস আহমদ কোরাইশি, সিরাজুল আলম খানের সঙ্গে ব্যক্তিগত ঘনিষ্ট ছিলেন।

পারিবারিক সূত্র জানায়, নিভৃতচারী এই জ্ঞানতাপস সারা জীবন সহজ সরল জীবন যাপন করেছেন। যতদিন প্রিন্সিপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, প্রিন্সিপালের সুবিধাগুলো নেননি। সরকারি গাড়ি, সরকারি বাংলো কোনো কিছুই নেননি। এমনকি মোবাইল ফোনও না। লালবাগের বাসা থেকে পায়ে হেটেই অধিকাংশ সময় কলেজে আসতেন। যখন প্রিন্সিপাল ছিলেন তখনো একই নিয়ম ছিল।

৮ হাফেজ সন্তানের বাবা

প্রফেসর মো: নূরুল হক মিয়া প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হকের জামাতা। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই তাবলিগ জামাতের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। অধ্যাপনা ও লেখালেখির পাশাপাশি সারা জীবনই দাওয়াত ও তাবলিগের কাজ করেছেন। চাকরি জীবন থেকে অবসরের পর অনেক ধরনের অফার থাকলেও তিনি সেগুলো গ্রহণ করেননি। তাবলিগের কাজ করেছেন। বিভিন্ন দেশে সফর করেছেন।

তিনি দুই ছেলে ও ছয় কন্যার জনক। সবাইকেই তিনি কোরআনে হাফেজ বানিয়েছেন। দুই ছেলেই মাওলানা। দুইজনই দেশে প্রথম সারির দ্বীনি প্রতিষ্ঠান জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ার শিক্ষক। ঢাকা কলেজ প্রিন্সিপালের আট সন্তানই হাফেজ।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles
Uncategorizedআইন-আদালতআন্তর্জাতিকপ্রচ্ছদরাজনীতিসর্বশেষ

ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাবে, আশা টবি ক্যাডম্যানের

আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন বিশেষজ্ঞ ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের বিশেষ পরামর্শক...

Uncategorized

‘আমি মনে করি, আমরা সবাই সৎ’

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘আমি মনে করি, আমরা সবাই সৎ। অসৎ...

Uncategorized

আন্দোলনের ভয়েই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে চায় সরকার: ভিপি নুর

আন্দোলনের ভয়েই সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়...

Uncategorized

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় যাবজ্জীবন...