আজকের জেলা পরিক্রমা

শহিদ মিনার নেই জয়পুরহাটের ২২৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে

Share
Share

জয়পুরহাটের পাঁচটি উপজেলার সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২২৮টিতে আজ পর্যন্ত কোনো শহিদ মিনার বা স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়নি।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলন, শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং ‘৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার ইতিহাস, চেতনা ও আত্মত্যাগ সম্পর্কে আগামী প্রজন্মকে শানিত করে সম্যক ধারণা দেয়ার লক্ষ্যে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার থাকার কথা।

অথচ মহান ভাষা অন্দোলনের প্রায় ৬৮ বছর ও মুক্তিযুদ্ধের অর্ধশত বছর অতিক্রান্ত হলেও ভাষা ও স্বাধীনতার শহিদদের স্মৃতির স্মরণে উল্লেখিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এখনও শহিদ মিনার গড়ে ওঠেনি। তারপরও যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শহিদ মিনার স্থাপিত হয়েছে সেগুলো শুধু অমর একুশে, মহান জাতীয় ও স্বাধীনতা দিবস কিংবা বিজয় দিবস এলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও চুনকাম করা হয়। এছাড়া এসব শহিদ মিনারের অধিকাংশই প্রায় সারা বছর পড়ে থাকে অবহেলা ও অযত্নে। যেন দেখার কেউ নেই।

জয়পুরহাট জেলা (মাধ্যমিক) শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার পাঁচটি উপজেলায় মোট ৩১১টি সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। যার ২১টি কলেজ (মহাবিদ্যালয়), ২৩টি কারিগরি কলেজ (বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ), ৪টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক (ইন্টারমিডিয়েট কলেজ), ১১১টি মাদ্রাসা ও ১৫২টি উচ্চ বিদ্যালয়।

এই ৩১১টি সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২২৮টিতে এখন পর্যন্ত শহিদ মিনার স্থাপিত হয়নি।

তবে শহিদ মিনার স্থাপনে সরকারি নির্দেশনার কারণে নিজস্ব ফান্ড (তহবিল) না থাকায় এ ব্যাপারে শহিদ মিনার না থাকা প্রতিষ্ঠানের একটি তালিকা তৈরি করে জেলা পরিষদকে দেয়া হয়েছে। জয়পুরহাট জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধান ও আর্থিক সহায়তায় পর্যায়ক্রমে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শহিদ মিনার স্থাপিত হবে।

উল্লেখ্য, গত কয়েক বছরে জয়পুরহাটের বিভিন্ন উপজেলায় জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে অর্ধশতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার স্থাপিত হয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী জেলার ৫টি উপজেলার ৩৭১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব শহিদ মিনার স্থাপনের কাজ প্রায় সম্পন্ন হওয়ায় (কিছু শহিদ মিনারের ফিনিশিং হয়নি) এখন ‘শতভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার আছে’- এমনটি বলা যেতে পারে।

প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার স্থাপন সম্পর্কে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল কবির জানান, বেশ কিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থায়ী শহিদ মিনার ছিল। বাকি যে বিদ্যালয়গুলোতে শহিদ মিনার ছিল না সেগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থাধীনে (স্লিপের টাকার স্বল্প বাজেটে) সাময়িকভাবে অস্থায়ী শহিদ মিনার স্থাপন করা হয়েছে। কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সম্পর্কে ধারণা দেয়ার জন্য এসব শহীদ মিনার বানানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে জয়পুরহাটের জেলা প্রশাসক মো. শরীফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, জেলার যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নেই সেসব প্রতিষ্ঠানে দ্রুত শহিদ মিনার নির্মাণের জন্য জয়পুরহাট জেলা পরিষদকে তালিকা তৈরি করে দেয়া হয়েছে। নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ওই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনারের নির্মাণ কাজ শেষ হলে জেলার শতভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শহিদ মিনারের আওতায় আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles
আজকের জেলা পরিক্রমাসর্বশেষ

আগামীকাল থেকে শীত আরও বাড়বে

বৃহস্পতিবার থেকে দেশের তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে।  সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধানও...

আজকের জেলা পরিক্রমাঢাকাসর্বশেষ

পল্টনে সন্দেহভাজন ছিনতাইকারীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তরুণের মৃত্যু

রাজধানীর পল্টনের বিজয়নগর এলাকায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সাজু মোল্লা (২২) নামের এক...

আজকের জেলা পরিক্রমাবরিশাল

পরকীয়া করতে গিয়ে স্বামীর লাঠির আঘাতে প্রাণ গেল স্ত্রীর

বরগুনার আমতলীতে পরকীয়ার অভিযোগে স্বামীর লাঠির আঘাতে তিন্নি আক্তার (২০) নামে এক...

আজকের জেলা পরিক্রমা

পাওনা টাকা আনতে গিয়ে শ্রমিক খুন

পাওনা টাকা আনতে গিয়ে মো. আবুল কালাম আজাদ নামে (২৩) এক শ্রমিক...