আন্তর্জাতিক

পঙ্গপাল ধরে সার ও পুষ্টিকর খাদ্য বানানো হচ্ছে কেনিয়ায়!

Share
Share

সম্প্রতি কেনিয়ায় কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর আক্রমণ চালায় পঙ্গপাল। তবে দেশটির কৃষকরা পঙ্গপালের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। আর সেই লড়াইয়ে কেনিয়ার কৃষকদের সহযোগিতা করছে ‘দ্য বাগ পিকচার’ নামের একটি সংস্থা। ফসল ধ্বংস করা এই পঙ্গপালগুলোকে কাজে লাগাচ্ছেন তারা। নানা উপায়ে পঙ্গপালগুলো ধরে জৈব সার ও প্রোটিন সমৃদ্ধ প্রাণিখাদ্য তৈরি করা হচ্ছে। রয়টার্সের খবরে এমনটিই বলা হয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তন ও অস্বাভাবিক আবহাওয়া পঙ্গপালের সংখ্যা বৃদ্ধির পরিস্থিতি তৈরি করেছে। আর এই পঙ্গপালগুলো পূর্ব আফ্রিকা এবং হর্ন অব আফ্রিকাজুড়ে ফসল ও চারণভূমিকে ধ্বংস করছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, উষ্ণ সমুদ্র বেশি বৃষ্টিপাতের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে পঙ্গপালের সুপ্ত ডিমগুলোর বাচ্চা ফুটছে।

‘দ্য বাগ পিকচার’ মধ্য কেনিয়ার লাইকিপিয়া, ইসিওলো ও সাম্বু নামক অঞ্চলের আশেপাশের কৃষক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করছে। কীটপতঙ্গ সংগ্রহ এবং সংগ্রহের পর পতঙ্গগুলোকে প্রক্রিয়াজাত করছে সংস্থাটি। এ ছাড়াও কীটপতঙ্গগুলোকে প্রক্রিয়াজাত করে খামারের জন্য প্রোটিন সমৃদ্ধ প্রাণিখাদ্য এবং জৈব সারে পরিণত করছে সংস্থাটি।

‘দ্য বাগ পিকচার’র প্রতিষ্ঠাতা লরা স্ট্যানফোর্ড বলছেন, আমরা আশাহীন পরিস্থিতিতে আশা তৈরি করার চেষ্টা করছি। এই পোকামাকড়গুলোকে একটি মৌসুমি ফসল হিসেবে দেখার চেষ্টা করছি। অর্থের বিনিময়ে এগুলো বিক্রি করা যেতে পারে তা দেখাতে দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে সহায়তা করছি।

মধ্য কেনিয়ার লাইকিপিয়া অঞ্চলে ফসল সাবার করছে ভয়ঙ্কর পঙ্গপাল। সেই অঞ্চলের পাঁচ হেক্টর জায়গার পঙ্গপালগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে বাগ পিকচার। স্প্রে করে ওই অঞ্চলের পঙ্গপালগুলোকে ধরা হবে। এরপর এগুলো দিয়ে তৈরি হবে সার কিংবা প্রাণিখাদ্য।

পঙ্গপালগুলো প্রতিদিন ১৫০ কিলোমিটার (৯৩ মাইল) পর্যন্ত উড়তে করতে পারে। আর প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৪০ থেকে ৮০ মিলিয়ন পঙ্গপাল থাকতে পারে। স্থানীয় কৃষক জোসেফ মেজিয়া বলেন, খামারে আক্রমণ চালালে সব ফসল ধ্বংস করে দেয়। কখনও কখনও পঙ্গপাল এতোগুলো হয় যে, কোনটি ফসল আর কোনটি পঙ্গপাল তা আলাদা করা যায় না।

দ্য বাগ পিকচার প্রতি কেজি পঙ্গপালের জন্য মেজিয়া ও তার প্রতিবেশীদের ৫০ কেনিয়ান শিলিং করে দিয়েছে। ফেব্রুয়ারির ১ থেকে ১৮ তারিখের মধ্যে চলা এক প্রকল্পের জন্য ১ দশমিক ৩ টন পঙ্গপাল সংগ্রহ করবে তারা। স্ট্যানফোর্ড জানিয়েছেন, তারা পাকিস্তানের একটি প্রকল্প দেখে এই কাজ করতে উদ্যোগী হন।

রাতের বেলায় ঝোপঝাড় ও গাছের ওপর বিশ্রাম নেওয়ার সময় টর্চলাইট দিয়ে পঙ্গপালগুলো সংগ্রহ করা হচ্ছে। ধরার পর পঙ্গপালগুলো গুঁড়ো করে শুকানো হয়। পরে তা পাউডারের মধ্যে মিলড করে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। আর এগুলোকেই প্রাণিখাদ্য বা জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

সূত্র: রয়টার্স।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles
আন্তর্জাতিকসর্বশেষ

শব্দের চেয়ে ৪ গুণ গতির ড্রোন বানাচ্ছে চীন

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স কিছু দিন আগে পরবর্তী...

আন্তর্জাতিকসর্বশেষ

ভারতে বাংলাদেশি নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা

ভারতে কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরু শহরের কালকেরে হ্রদের কাছে ২৮ বছর বয়সী বাংলাদেশি...

আন্তর্জাতিকসর্বশেষ

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের হুঁশিয়ারি সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রীর

ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন চীনের বিরুদ্ধে নতুন হুমকি নিয়ে হোয়াইট হাউসে ফিরে এসেছেন।...

আন্তর্জাতিকসর্বশেষ

দায়িত্ব নিয়েই সেনা মোতায়েন শুরু করেছেন ট্রাম্প

অভিবাসন নিয়ে কঠোরতার ঘোষণা দিয়েছেন মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরই অংশ হিসেবে...