লীড নিউজ

ভাসানচর পুরোপুরি নিরাপদ, বাসযোগ্য

Share
Share

নোয়াখালীর ভাসানচর দ্বীপকে পুরোপুরি নিরাপদ ও বাসযোগ্য বলে একটি গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে আজ শনিবার প্রতিবেদনটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ফাউন্ডেশন ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (সিএফআইএসএস) সহায়তায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগ ওই গবেষণা পরিচালনা করেছে।

গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল। সিএফআইএসএস চেয়ারম্যান কমোডর এম এন আবসার অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন। গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. তৌহিদুল ইসলাম। প্রধান গবেষক ড. মো. রফিকুল ইসলামের সঙ্গে গবেষক দলটিতে ছিলেন ড. মো. তৌহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ শাহীনুর আলম ও মারিয়া হোসাইন।

গবেষকরা জানান, তাদের গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ছিল ভাসানচরের সামাজিক ও পরিবেশগত স্থায়িত্ব পর্যবেক্ষণ করা। গবেষণার তথ্য-উপাত্ত এবং ভূতত্ত্ববিদ, পরিবেশবিদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ও সমাজবিজ্ঞানীদের মতামত বিশ্লেষণ করে তাঁরা দেখতে পেয়েছেন যে ভাসানচর একটি নতুন দ্বীপ হিসেবে পুরোপুরি বসবাসযোগ্য। এই দ্বীপে প্রতিষ্ঠিত স্থাপনা যেমন আধুনিক বাসস্থান, রাস্তা, আশ্রয়কেন্দ্র, বাঁধ দ্বীপকে টেকসই করেছে। নয় ফুট উঁচু বাঁধ ১৯ ফুট উঁচু করা হচ্ছে। বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে দ্বীপটি ডুবে যাওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। বিশেষ করে, তিন স্তরের দুর্যোগ নিরাপত্তা ব্যবস্থা দ্বীপটিকে ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার কবল থেকে রক্ষা করবে।

এছাড়া প্রকল্প-সংশ্লিষ্টদের সাক্ষাৎকার থেকে গবেষকরা জানতে পেরেছেন, ভাসানচরে কৃষিকাজ, সবজি চাষ, মাছ শিকারসহ আরো জীবন-জীবিকার সুযোগ-সুবিধা আছে। শিক্ষা, চিকিৎসা, ধর্ম-কর্ম পালন ও বিনোদনের জন্য রয়েছে বিশেষ সুবিধা। দুর্যোগে বিশেষ পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার জন্য আধুনিক আশ্রয়কেন্দ্রও নির্মাণ করা হয়েছে।

ভাসানচরের বিপরীতে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে বিদ্যমান বেশ কিছু সমস্যা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। বিশেষ করে শিবিরে মাদক ইয়াবা, অবৈধ অস্ত্র, পতিতাবৃত্তি, মানবপাচার, মাদকের বিস্তার ও কেনাকাটার তথ্য গবেষণায় স্থান পেয়েছে। এসব বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের জন্য ভাসানচরকে কক্সবাজারের চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ স্থান বলে গবেষকরা মনে করছেন।
গবেষণা প্রতিবেদনে ভাসানচরকে আরো টেকসই করতে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।
ভবিষ্যতে কোনো ধরনের পানির সংকট এড়াতে সেখানে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও দৈনন্দিন কাজে ওই পানি ব্যবহারের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। রোহিঙ্গা ছেলেমেয়েদের তাদের নিজ ভাষায় পাঠদান এবং রোহিঙ্গাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড চালানোর ব্যবস্থা করার সুপারিশ রয়েছে প্রতিবেদনে।

দরিদ্র রোহিঙ্গাদের আয়ের ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য আনতে কিছু কুটির শিল্প স্থাপন এবং ভাসানচরের সম্ভাবনা নিয়ে আরো বিশ্লেষণের জন্য বিষয়ভিত্তিক গবেষণায় জোর দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন, দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles
রাজনীতিলীড নিউজসর্বশেষ

এক-এগারোর ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এক-এগারোর ভয় দেখিয়ে...

জাতীয়লীড নিউজসর্বশেষ

শেখ হাসিনার আমলের প্রবৃদ্ধির পুরোটাই ভুয়া: রয়টার্সকে ড. ইউনূস

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত...

জাতীয়লীড নিউজসর্বশেষ

১৬ বছর পর কারামুক্ত বিডিআরের ১৬৮ সদস্য

দীর্ঘ ১৬ বছর পর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন বিস্ফোরক মামলায় জামিন পাওয়া...

জাতীয়লীড নিউজসর্বশেষ

জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে ড. ইউনূসের সাক্ষাৎ

সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনের ফাঁকে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে...