লীড নিউজ

খালেদার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন প্রধানমন্ত্রীর কাছে

Share
Share

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানোর আবেদন প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তা অনুমোদন দিলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। সুরক্ষা সেবা বিভাগের একজন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ তথ্য জানিয়েছেন।

এর আগে গত সোমবার (৮ মার্চ) বেগম জিয়ার শাস্তি স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানোর বিষয়ে মতামত দিয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত ফাইল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর ক্ষেত্রে আগের শর্তগুলো বহাল রাখার বিষয়ে তাদের মতামতের কথাও জানায় আইন মন্ত্রণালয়।

আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বেগম জিয়ার দ্বিতীয় দফায় ৬ মাসের মুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৪ মার্চ। আগের মতো মুক্তির বর্ধিত মেয়াদে খালেদা জিয়া নিজ বাসায় থেকে তার চিকিৎসা গ্রহণ করবেন। একইসঙ্গে এই সময়ে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না বলে শর্ত দেয়া হয়েছে।

তবে দেশের মধ্যে যে কোনো হাসপাতালে গিয়ে বেগম জিয়া চিকিৎসা নিতে পারবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

গত ২ মার্চ পরিবারের পক্ষ থেকে দেয়া বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো, মওকুফ এবং শর্ত শিথিল করে বিদেশে পাঠানোর আবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়। এই আবেদনের বিষয়ে মতামত দিতে তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায় ঘোষণার পর খালেদাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। এরপর ৩০ অক্টোবর এ মামলায় আপিলে তার আরও পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট।

একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন একই আদালত। রায়ে ৭ বছরের কারাদণ্ড ছাড়াও খালেদা জিয়াকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

কারান্তরীণ অবস্থায়ই চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে নেয়া হয় খালেদা জিয়াকে। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা শেষে তাকে আবারও কারাগারে পাঠানো হয়। এভাবে কয়েক দফায় তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে এবং হাসপাতাল থেকে কারাগারে নেয়া হয়।

মামলা দু’টি ষড়যন্ত্রমূলক বলার পাশাপাশি বিএনপি নেতারা খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য মুক্তির দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এ ক্ষেত্রে তারা আদালতেও আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু বরাবরই বিফল হতে হয়েছে বিএনপির নেতৃত্বকে।

এর মধ্যে বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে বিএনপি নেতারা খালেদার মুক্তির জোর দাবি তোলেন। পরিবারের পক্ষ থেকেও বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়। সেই প্রেক্ষাপটে নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত করে কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে সরকার শর্তসাপেক্ষে ৬ মাসের জন্য মুক্তি দেয়।

প্রথম দফা মুক্তির মেয়ার শেষ হয়ে আসলে গত বছরের ২৫ আগস্ট বেগম জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে স্থায়ী মুক্তি চেয়ে আবেদন করা হয়। আবেদন বিবেচনা করে সরকার দ্বিতীয় দফায় গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ মাসের জন্য তার মুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করে।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles
রাজনীতিলীড নিউজসর্বশেষ

এক-এগারোর ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এক-এগারোর ভয় দেখিয়ে...

জাতীয়লীড নিউজসর্বশেষ

শেখ হাসিনার আমলের প্রবৃদ্ধির পুরোটাই ভুয়া: রয়টার্সকে ড. ইউনূস

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত...

জাতীয়লীড নিউজসর্বশেষ

১৬ বছর পর কারামুক্ত বিডিআরের ১৬৮ সদস্য

দীর্ঘ ১৬ বছর পর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন বিস্ফোরক মামলায় জামিন পাওয়া...

জাতীয়লীড নিউজসর্বশেষ

জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে ড. ইউনূসের সাক্ষাৎ

সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনের ফাঁকে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে...