তথ্য ও প্রযুক্তি

বিপ অ্যাপ কি নিরাপদ?

Share
Share

নিজের তথ্য চুরি হয়ে যাওয়ার ভয়ে এখন অনেকেই হোয়াটসঅ্যাপের বদলে বিপ অ্যাপ ব্যবহার শুরু করেছেন। ২০১৩ সালে তুরস্কের নামকরা মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানি টার্কসেল বিপ অ্যাপ বাজারে ছাড়ে। বিশ্বের ১৯২টি দেশে এই অ্যাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। ব্যবহারকারীদের বেশির ভাগই ইউরোপবাসী। এ তালিকায় এখন বাংলাদেশের নাম যুক্ত হয়েছে।

এখন বাংলাদেশে ডাউনলোডের দিক থেকে বিপ অ্যাপ শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু বিপ অ্যাপে কি আপনার গোপনীয় রক্ষা হচ্ছে? বিপ অ্যাপ কি নিরাপদ?
বিপ অ্যাপের প্রাইভেসি পলিসি সেকশনে গেলে শুরু থেকেই দেখা যায় যে, তারা ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য নেওয়ার ব্যাপারে স্পষ্টভাবে লিখে রেখেছে—বিপ ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ করে। অ্যাপটিতে নিবন্ধন করার সময় ব্যবহারকারী কর্তৃক প্রদত্ত তথ্য ও প্রফাইল সাজানোর সময় দেওয়া তথ্য ও অ্যাপের মাধ্যমে যেকোনো কেনাকাটা করার তথ্য থেকে শুরু করে প্রায় সব ধরনের তথ্যই তারা সংরক্ষণ করে। অর্থাৎ ব্যবহারকারীর ফোন নম্বর, ইউজারনেম, পাসওয়ার্ড, সিম অপারেটর, ইউজার বিহেভিয়র, স্ট্যাটাস, প্রফাইল পিকচার, ফোনে সেভ থাকা সব কন্টাক্ট নম্বর, ব্লক করা নম্বর, ইউজার লোকেশন, ফোনের মডেল, অপারেটিং সিস্টেম ইত্যাদি ডাটা এই অ্যাপ সংরক্ষণ করে। যে তথ্য প্রদানের ভয়ে ব্যবহারকারীরা এক অ্যাপ থেকে অন্য অ্যাপে চলে যাচ্ছেন এমন সব তথ্যই বিপ নিয়ে রাখে।

ব্যবহারকারী যদি ডাটা ব্যাকআপ অপশনটি চালু রাখেন সে ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর সব ডাটা যে শুধু সার্ভারে সংরক্ষিত থাকে তা নয়, পলিসি অনুযায়ী তুরস্কে অবস্থিত নিজেদের সার্ভারে দুই বছর পর্যন্ত সেসব ডাটা সংরক্ষণের অধিকার রাখে বিপ। আরো ভয়ের কথা, এই প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনে ব্যবহারকারীদের তথ্য যেকোনো থার্ড পার্টি কম্পানির সঙ্গে শেয়ার করার অধিকারও রাখে।

যেকোনো মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশনের স্ট্যান্ডার্ড ফিচার অনুযায়ী সেখানে ট্রান্সলেটর বা পেমেন্ট সিস্টেম থাকার কথা নয়, কারণ এতে গোপনীয়তা নষ্ট হয়। বিপে অনুবাদ করার কাজে মাইক্রোসফট ও গুগলকে থার্ড পার্টি হিসেবে সমন্বয় করা আছে। আর যেকোনো ট্রান্সলেটরকেই অনুবাদ করতে হলে প্রতিটি অক্ষর প্রতিটি শব্দ লাইন ধরে ধরে পাঠ করতে হয়। এখানেই ব্যবহারকারীর প্রাইভেসি সম্পূর্ণ ভঙ্গ হচ্ছে। এদিকে পেমেন্ট সিস্টেম যেহেতু ইন্টিগ্রেট করা আছে, আবার বিভিন্ন থার্ড পার্টি এখানে ইন্টিগ্রেটেড আছে, সুতরাং এমন একটি অ্যাপ্লিকেশনে পেমেন্ট কার্ড সংযোজন করা সম্পূর্ণ অনিরাপদ।

আবার অ্যাপটি ফোনে ইনস্টলের পর চালু করলে ফোনের সব ধরনের পারমিশন নিয়ে নেয়। অদ্ভুত বিষয় এই যে এটি নিজে মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশন হলেও ফোনে থাকা ডিফল্ট এসএমএস অ্যাপ্লিকেশনটির সম্পূর্ণ পারমিশন নিয়ে নেয়। এ ছাড়া বিপ অ্যাপ্লিকেশন এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশনের কথা বললেও এ সম্পর্কিত কোনো ধরনের ডকুমেন্টেশন নিজেদের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে বা অ্যাপে পাওয়া যায় না।

যদিও বিপ অ্যাপের পক্ষ থেকে গোপনীয়তা রক্ষার বিশেষ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে, এটিতে ভয়েস কল ও মেসেজ আদান-প্রদান সম্পূর্ণ গোপন ও নিরাপদ থাকবে।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles
তথ্য ও প্রযুক্তিসর্বশেষ

বাংলাদেশে আসছে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট

বাংলাদেশে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা আনতে যাচ্ছে মোবাইল অপারেটর কোম্পানি বাংলালিংকের উদ্যোক্তা...

তথ্য ও প্রযুক্তিসর্বশেষ

হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাসে নতুন যে সুবিধা আসছে

বার্তা আদান-প্রদানের জনপ্রিয় অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপে লিখিত বা অডিও বার্তা পাঠানোর পাশাপাশি স্ট্যাটাসও...

তথ্য ও প্রযুক্তি

চুরি হওয়া মোবাইলের অবস্থান ও চোরের ছবি পাঠাবে যে অ্যাপ!

মোবাইল ফোন চুরি হওয়া বা হারিয়ে যাওয়া নিত্যদিনের ঘটনা। হারানো বা চুরি...

তথ্য ও প্রযুক্তি

মহাকাশচারীর ক্যামেরায় এক ফ্রেমে বন্দি পৃথিবীর দুই মহাদেশ

মহাকাশচারীর ক্যামেরায় তোলা এক ছবিতে পৃথিবীর দুই মহাদেশের এক অসাধারণ ছবি প্রকাশ...